অভিমানে ঘর ছেড়েছিল ১৫ বছরের ভারতীয় কিশোর অঙ্কিত৷ ছয় বছর পর আবার বাড়ি, বাবা-মায়ের জন্য মন কাঁদল তার, সৌজন্যে ফেসবুক৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বলে কথা! অমরেশ চতুর্বেদীর একমাত্র পুত্র অঙ্কিত, যে ১৫ বছর বয়সে অভিমান করে ঘর ছেড়ে উধাও হয়েছিল, দীর্ঘ ছয় বছর পর সে ঘরে ফিরে এসেছে৷ বাবা-মায়ের কাছে ফিরে এসেছে এবং এখন থেকে সে কলকাতার বাড়িতেই থাকবে৷ অমরেশ চতুর্বেদীর গলায় ঝরে পড়ছিল অকৃত্রিম স্বস্তি আর খুশি৷ তিনি বলেন, ‘ছেলে সুস্থ আছে, ভালো আছে, বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর কোনো বদসঙ্গে পড়েনি, মাদকাসক্ত হয়নি, বরং চাকরি খুঁজে নিয়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিল, নিজের পায়ে দাঁড়াবার চেষ্টা করছিল, এটাই তাঁদের সবথেকে বড় পাওয়া৷’ এই স্বস্তি দ্বিগুণ হয়েছে, যখন ছেলে নিজে বলেছে যে, এখন থেকে সে বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকবে৷ অঙ্কিত ১৫ বছরে ঘর ছেড়ে অন্য রাজ্যে, অন্য শহরে গিয়ে কাজ করছিল মানে তো পড়াশোনা আর এগোয়নি৷ ছেলে কি আবার পড়াশোনা শুরু করবে? অমরেশ জবাব দিলেন, ‘ছেলের যা ইচ্ছে, ও তা-ই করবে৷ ও যদি আবার পড়তে চায়, তা হলে নিশ্চয়ই পড়বে৷'' তাঁর গলার স্বরেই স্পষ্ট ছিল, অঙ্কিতকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে সাহসী হয়েছেন অমরেশ চতুর্বেদী৷ অথচ দু'সপ্তাহ আগেও তাঁর মানসিকতা এই পর্যায়ে ছিল না৷ তখন তিনি এমন একজন দুঃখী পিতা, যাঁর একমাত্র পুত্র অভিমান করে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছে৷ দু'সপ্তাহ আগেও ছেলের খোঁজ যিনি পাননি, শুধু অসহায়ের মতো খুঁজে চলেছেন৷ মাত্র এক মাস আগের কথা, ফেসবুকে নিজের পাতায় ছেলের ১৫ বছর বয়সের ছবি, সঙ্গে নিজের মোবাইল ফোনের নম্বর দিয়ে আকুল আবেদন জানিয়েছিলেন, ‘বাবু, যেখানেই থাকো, একবার ফোন কোরো৷ অনেকদিন তোমার আওয়াজ শুনি না।’ ৪ঠা মে-র সেই পোস্টের এক সপ্তাহ পর, ১১ই মে নিজের একটি ছবি দিয়ে অমরেশ চতুর্বেদী হারানো ছেলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার শরীর খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে৷ আমার ফটো দেখে বুঝতে পারবে তোমাকে ছাড়া আমি কেমন আছি৷ কিছু হয়ে গেলে আমার মুখাগ্নি করার কেউ নেই!’ তা হলে কি জানতে পেরেছিলেন, অঙ্কিত ফেসবুকে আছে? না৷ জবাব দিলেন অমরেশ চতুর্বেদী৷ আসলে ছ'বছর ধরে হন্যে হয়ে ছেলের খোঁজ করার সময় যখন যে যা পরামর্শ দিয়েছে, তা-ই করেছেন৷ সেভাবেই ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকে নিজের একটা প্রোফাইল তৈরি করে ছেলের ছবি পোস্ট করে গিয়েছেন এবং আত্মীয়-বন্ধু নানাজনকে অনুরোধ করেছেন ছবিটি শেয়ার করার জন্য, যদি কেউ কোনো খোঁজ দিতে পারে, এই আশায়৷ শেষ পর্যন্ত খোঁজ এল ফেসবুকের সুবাদেই৷ হঠাৎ একটি অপরিচিত ইমেল ঠিকানা থেকে একটি লাইন এলো, ‘আমি বাড়ি ফিরব'৷ এই সময়ই আর একটি জরুরি যোগাযোগ তৈরি হয়ে গেল৷ পেশায় বাণিজ্য কর বিষয়ক আইনজীবী অমরেশ চতুর্বেদীর এক মক্কেল আছেন, যিনি ছাত্রজীবনের সূত্রে পুলিশের এক বড়কর্তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু৷ তাঁর সুবাদে পুলিশও এরপর ত ৎপর হলো নিখোঁজ অঙ্কিতের হদিশ করতে এবং চলতি জুলাইয়ের ৩ তারিখে অঙ্কিত আবার সেই ফেসবুকেই বন্ধুদের জানাল, সে কলকাতা ফিরে যাচ্ছে৷ আর ১৫ বছরের অভিমানী কিশোর নয়, সে এখন ২১ বছরের তরতাজা যুবক৷ ছবছর ঘরছাড়া থাকা এবং নিজের দায়িত্ব নিজে নেওয়ার সুবাদে সম্ভবত ২১ বছরের তুলনায় একটু বেশিই অভিজ্ঞ৷ তাই ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অঙ্কিতের দেরি হয়নি৷ জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক নিয়ে অনেকেরই নানা আপত্তি, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের বাবা-মায়েদের৷ অনেকেই বলেন, এইসব সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ঘরে এবং সম্পর্কেও ভাঙন ধরাচ্ছে! সেই সমস্ত অভিযোগের মধ্যেই সম্ভবত উজ্জ্বল এক ব্যতিক্রম হয়ে থাকবে সম্পর্ক জোড়া দেওয়ার এই ঘটনাটি৷
Home » সচেতনতা » ফেসবুকের কল্যাণে ৬ বছর পর ঘরে ফিরলো অভিমানী ছেলে
ফেসবুকের কল্যাণে ৬ বছর পর ঘরে ফিরলো অভিমানী ছেলে
মোঃ আব্দুল মাজেদ সরকার | ৩:০৮ PM | ফেসবুক | সচেতনতাঅভিমানে ঘর ছেড়েছিল ১৫ বছরের ভারতীয় কিশোর অঙ্কিত৷ ছয় বছর পর আবার বাড়ি, বাবা-মায়ের জন্য মন কাঁদল তার, সৌজন্যে ফেসবুক৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বলে কথা! অমরেশ চতুর্বেদীর একমাত্র পুত্র অঙ্কিত, যে ১৫ বছর বয়সে অভিমান করে ঘর ছেড়ে উধাও হয়েছিল, দীর্ঘ ছয় বছর পর সে ঘরে ফিরে এসেছে৷ বাবা-মায়ের কাছে ফিরে এসেছে এবং এখন থেকে সে কলকাতার বাড়িতেই থাকবে৷ অমরেশ চতুর্বেদীর গলায় ঝরে পড়ছিল অকৃত্রিম স্বস্তি আর খুশি৷ তিনি বলেন, ‘ছেলে সুস্থ আছে, ভালো আছে, বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর কোনো বদসঙ্গে পড়েনি, মাদকাসক্ত হয়নি, বরং চাকরি খুঁজে নিয়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিল, নিজের পায়ে দাঁড়াবার চেষ্টা করছিল, এটাই তাঁদের সবথেকে বড় পাওয়া৷’ এই স্বস্তি দ্বিগুণ হয়েছে, যখন ছেলে নিজে বলেছে যে, এখন থেকে সে বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকবে৷ অঙ্কিত ১৫ বছরে ঘর ছেড়ে অন্য রাজ্যে, অন্য শহরে গিয়ে কাজ করছিল মানে তো পড়াশোনা আর এগোয়নি৷ ছেলে কি আবার পড়াশোনা শুরু করবে? অমরেশ জবাব দিলেন, ‘ছেলের যা ইচ্ছে, ও তা-ই করবে৷ ও যদি আবার পড়তে চায়, তা হলে নিশ্চয়ই পড়বে৷'' তাঁর গলার স্বরেই স্পষ্ট ছিল, অঙ্কিতকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে সাহসী হয়েছেন অমরেশ চতুর্বেদী৷ অথচ দু'সপ্তাহ আগেও তাঁর মানসিকতা এই পর্যায়ে ছিল না৷ তখন তিনি এমন একজন দুঃখী পিতা, যাঁর একমাত্র পুত্র অভিমান করে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছে৷ দু'সপ্তাহ আগেও ছেলের খোঁজ যিনি পাননি, শুধু অসহায়ের মতো খুঁজে চলেছেন৷ মাত্র এক মাস আগের কথা, ফেসবুকে নিজের পাতায় ছেলের ১৫ বছর বয়সের ছবি, সঙ্গে নিজের মোবাইল ফোনের নম্বর দিয়ে আকুল আবেদন জানিয়েছিলেন, ‘বাবু, যেখানেই থাকো, একবার ফোন কোরো৷ অনেকদিন তোমার আওয়াজ শুনি না।’ ৪ঠা মে-র সেই পোস্টের এক সপ্তাহ পর, ১১ই মে নিজের একটি ছবি দিয়ে অমরেশ চতুর্বেদী হারানো ছেলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার শরীর খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে৷ আমার ফটো দেখে বুঝতে পারবে তোমাকে ছাড়া আমি কেমন আছি৷ কিছু হয়ে গেলে আমার মুখাগ্নি করার কেউ নেই!’ তা হলে কি জানতে পেরেছিলেন, অঙ্কিত ফেসবুকে আছে? না৷ জবাব দিলেন অমরেশ চতুর্বেদী৷ আসলে ছ'বছর ধরে হন্যে হয়ে ছেলের খোঁজ করার সময় যখন যে যা পরামর্শ দিয়েছে, তা-ই করেছেন৷ সেভাবেই ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকে নিজের একটা প্রোফাইল তৈরি করে ছেলের ছবি পোস্ট করে গিয়েছেন এবং আত্মীয়-বন্ধু নানাজনকে অনুরোধ করেছেন ছবিটি শেয়ার করার জন্য, যদি কেউ কোনো খোঁজ দিতে পারে, এই আশায়৷ শেষ পর্যন্ত খোঁজ এল ফেসবুকের সুবাদেই৷ হঠাৎ একটি অপরিচিত ইমেল ঠিকানা থেকে একটি লাইন এলো, ‘আমি বাড়ি ফিরব'৷ এই সময়ই আর একটি জরুরি যোগাযোগ তৈরি হয়ে গেল৷ পেশায় বাণিজ্য কর বিষয়ক আইনজীবী অমরেশ চতুর্বেদীর এক মক্কেল আছেন, যিনি ছাত্রজীবনের সূত্রে পুলিশের এক বড়কর্তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু৷ তাঁর সুবাদে পুলিশও এরপর ত ৎপর হলো নিখোঁজ অঙ্কিতের হদিশ করতে এবং চলতি জুলাইয়ের ৩ তারিখে অঙ্কিত আবার সেই ফেসবুকেই বন্ধুদের জানাল, সে কলকাতা ফিরে যাচ্ছে৷ আর ১৫ বছরের অভিমানী কিশোর নয়, সে এখন ২১ বছরের তরতাজা যুবক৷ ছবছর ঘরছাড়া থাকা এবং নিজের দায়িত্ব নিজে নেওয়ার সুবাদে সম্ভবত ২১ বছরের তুলনায় একটু বেশিই অভিজ্ঞ৷ তাই ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অঙ্কিতের দেরি হয়নি৷ জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক নিয়ে অনেকেরই নানা আপত্তি, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের বাবা-মায়েদের৷ অনেকেই বলেন, এইসব সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ঘরে এবং সম্পর্কেও ভাঙন ধরাচ্ছে! সেই সমস্ত অভিযোগের মধ্যেই সম্ভবত উজ্জ্বল এক ব্যতিক্রম হয়ে থাকবে সম্পর্ক জোড়া দেওয়ার এই ঘটনাটি৷
অনুসন্ধান
এখন সাথে আছেন
বিভাগ
আমাদের খাদ্য
ইন্টারনেট
ইন্টারনেটে আয়
উইন্ডোজ ১০
উইন্ডোজ ৮
উইন্ডোজ এক্সপি
উইন্ডোজ সেভেন
উৎসব
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
কবিতা- সাহিত্য
কেনাকাটা
ক্যারিয়ার
খেলার খবর
টিপস এন্ড ট্রিকস
টিভি
দুর্যোগ
ধর্ম
প্রতিভার খবর
প্রযুক্তির খবর
প্রাণী জগৎ
প্রেম-ভালবাসা
ফটোগ্রাফি
ফেসবুক
বাংলা ছিনেমা
ভ্রমণ
মোবাইল ফোন
রহস্যময় খবর
রেডিও
লাইভ টিভি
লিনাক্স
শিক্ষা
সচেতনতা
সম্পর্ক
সাংস্কৃতিক সংবাদ
সৌরবিদ্যুৎ
স্বাস্থ্য -চিকিতস্যা
হাসপাতালের নাম-ঠিকানা
জনপ্রিয় লেখাগুলো
-
একটা সম্পর্ক তৈরিতে দুইজন মানুয়ের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা থাকলেও সেই সস্পর্কটা ভেঙ্গে ফেলতে একজনের ভূমিকা ই যথেষ্ট। অথচ এই সম্পর্কটাই আপনার ...
-
ওর হাতে আমার হাত রেখে…… ওর পায়ে আমার পায়ে পা রেখে… বাসা হইতে বাড্ডা, নতুন বাজার, গুলশান-২, বনানী, কাকলী হয়ে বনানী ফ্লাইওভার দিয়ে মিরপু...
-
কেমন হবে ভবিষ্যতের স্মার্টফোন ? অনেকের মনেই হয়তো এমন প্রশ্ন জাগতে পারে। কেননা দিন দিনই পরিবর্তন আসছে স্মার্টফোনের কনফিগারেশনে। উন্নত থেক...
-
ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্যে আমরা কত কী-ই না করে থাকি। নিয়মিত পরিস্কার করা থেকে শুরু করে ফেসপ্যাক, ফেশিয়াল, বিউটি পার্লার কিছুই বাদ ...