খুব শিগগিরই আকাশে উড়তে যাচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ আকাশযান। এটি হবে
এয়ারশিপ, হেলিকপ্টার এবং বিমানের একটি শঙ্কর। বর্তমানের উড়োজাহাজগুলোর
তুলনায় হবে অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব এবং আরো বেশি কার্যকর।
একবার জ্বালানি ভরলে এই আকাশযানটি টানা তিন সপ্তাহ চলতে পারবে। ফলে
পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখতে
পারবে এটি। তিনশ ফুট বা ৯১ মিটার দৈর্ঘ্যের এ আকাশযান ৫০ টন ভার বহন করতে
সক্ষম। এছাড়া একে পর্যবেক্ষণ ও যোগাযোগের কাজেও ব্যবহার করা যাবে।
ব্রিটেনের হেভি মেটাল ব্যান্ড আইরন মেইডেনের প্রধান গায়ক ব্রুস ডিকসন,
একে ‘থান্ডারবার্ড-২’ এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। এবং তিনি একে ‘গেম চেঞ্জার’
বলেও অভিহিত করেছেন।
রেডিও ফোর এর টুডে প্রোগ্রামে তিনি বলেন, ‘এ আকাশযান অনায়াসে
আটলান্টিক পাড়ি দিতে পারবে। আর এর জন্য লাগবে না কোনো রানওয়ে বা লঞ্চপ্যাড।
এটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ মাইল বেগে চলতে পারবে। আর একটানা আকাশে উড়তে
পারবে সাড়ে তিন দিন।’
এ আকাশযানের জন্য তিনি প্রচারণায় নামবেন এবং এতে চড়ে সারা বিশ্বে দুইবার ভ্রমণ করার ইচ্ছে আছে বলে জানান।
খুব কম মাত্রায় কার্বন নির্গমনকারী এ আকাশযানের কোড নাম দেয়া হয়েছে
‘HAV304’। এটি বর্তমানের মালবাহী বিমানগুলোর চেয়ে ৭০ শতাংশ কম কার্বন
নির্গমন করবে।
সম্প্রতি এর মডেলটি ব্রিটেনের বেডফোর্ডশায়ারের কারডিংহামে প্রদর্শন
করা হয়েছে। এর নির্মাণ শুরু হয়েছিল মূলত একশ বছর আগে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ
এটি ব্রিটেনের আকাশে উড়বে বলে জানা গেছে। ব্রিটেন সরকার ইতিমধ্যে এ
প্রকল্পের জন্য ২৫ লাখ পাউন্ড অর্থসহায়তা দিয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী ভিন্স ক্যাবল বলেন, ‘বিমান খাত বেশ উদীয়মান। এ খাতে
হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং ব্রিটেনের অর্থনীতিতে বিলিয়ন
বিলিয়ন পাউন্ড অবদান রাখতে পারবে। এ কারণে এ খাতে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে। এ
খাতে আমাদের বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করার ইচ্ছে আছে।’
বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ আকাশযানটি তৈরি করেছে ব্রিটিশ কোম্পানি হাইব্রিড
এয়ার ভেহিকল লিমিটেড। এটি প্রথম উড়ে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে। এটির উন্নত
সংস্করণ হিসেবে আসছে এয়ারল্যান্ডার-৫০ যা ৫০ টন ওজনের ভার বহন করতে পারবে।
ভবিষ্যতে এরকম ৬০০ থেকে ১ হাজারটি বিমান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে
কোম্পানিটির।
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ম্যাকগ্লেনান এ প্রকল্পে সরকারের
সহায়তাকে খুবই ইতিবাচকভাবে দেখছেন। এবং খুব শিগগিরই তারা সরকারের সহযোগিতা
নিয়েই এরকম পরিবেশবান্ধব ও কর্মক্ষমতাসম্পন্ন আকাশযান আকাশে উড়াতে চান।