সম্প্রতি বিটিসিএল ব্যান্ডউইথের মূল্য কমানোর পর এবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের তরঙ্গ মূল্যসহ বিভিন্ন ফির ওপর বিদ্যমান মূল্যসংযোজন কর (ভ্যাট) ১০ শতাংশ কমল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতিষ্ঠানটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করতে নীতি সহায়তা দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। এর ফলে গ্রাহকদের কিছুটা কম দামে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্যাকেজ দেয়ার সুযোগ তৈরি হলো এসব প্রতিষ্ঠানের। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে শেষ পর্যন্ত প্যাকেজের দাম কমবে কিনা সেই ব্যপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা। কারণ হিসেবে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ভ্যাট মওকুফ মূল্য কমানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। দেশে এই মুহূর্তে কয়েক ধরনের প্রতিষ্ঠান ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে, ওয়াইমেক্স অপারেটর, ব্রডব্র্যান্ড ওয়ারলেস এক্সসেস (বিডাব্লিউএ) ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডর (আইপিএস)।
বিদ্যমান আইনে এসব সংস্থার লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন ফি, স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) ফি এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের সঙ্গে (বিটিআরসি) আয় ভাগাভাগির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। ১ এপ্রিল এনবিআর ভ্যাট হার ৫ শতাংশে নামিয়ে এনে এক নির্দেশনা জারি করে। আর ওই নির্দেশনা সেদিন থেকেই কার্যকর হয়।
এনবিআরের নির্দেশনায় বলা হয়, জনস্বার্থের গুরুত্ব বিবেচনা করে ও এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ইন্টারন্টে সংযোগদাতা সংস্থার ওপর থেকে কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এক্ষত্রে দুটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। তবে ওয়াইম্যাক্স ও ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস এক্সেসের ক্ষেত্রে বিটিআরসির সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগি করতে হয় বলে তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাট কমানোর বেশ প্রভাব পড়বে।
এনবিআরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ইন্টারনেট সেবা গ্রাহকদের নাগালের মধ্যে আনতেই কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইভাবে মোবাইল অপারেটরদের থ্রিজি লাইসেন্স ফির ওপরও ভ্যাট কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। কর সুবিধা দেওয়ার পর গ্রাহকরা কম দামে ইন্টারনেট সেবা পাবে কি না সে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশের সাবেক সহ-সভাপতি সুমন আহমেদ সাব্বির বলেন, প্রদত্ত সুবিধা খুবই কম। কারণ লাইসেন্স নবায়নের বার্ষিক ফি এক লাখ টাকার ওপর এতদিন ১৫ হাজার টাকা ভ্যাট দিতে হতো। এখন ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। এতে লাভবান হওয়ার তেমন সুযোগ নেই। দৈনন্দিন সেবার ওপর বিদ্যমান ভ্যাট হার কমালে সেবা-মূল্যের উপর বেশি প্রভাব পড়ত।
প্রসঙ্গত, দেশের মানুষকে ইন্টারনেট সেবা দিতে বিটিআরসি থেকে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্স ও ২৮১ প্রতিষ্ঠানকে আইপিএস লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এর বাইরে শহরাঞ্চলে সেবা দিতে সাইবার ক্যাফেকে ১৯৮টি আইপিএস লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এসব ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠান তাদের বার্ষিক লাভের ওপর ২ শতাংশ হারে বিটিআরসিকে রাজস্ব দিতে হয়। এই ২ শতাংশের ওপরও ভ্যাট ধার্য রয়েছে।